আন্তর্জাতিক

রাণীশংকৈলে কোকোডাস্ট পদ্ধতিতে চারা উৎপাদনে সফল কৃষক মোবারক হোসেন

  admin ২৫ অক্টোবর ২০২৪ , ১:২০ পিএম প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব সংবাদদাতা, রাণীশংকৈল, ঠাকুরগাঁওঃ রবি মৌসুমে বিভিন্ন ধরনের সবজি উৎপাদনে ব্যস্ত থাকে রাণীশংকৈল উপজেলার কৃষকরা। আর এ জন্য এসময় কৃষকদের প্রয়োজন পড়ে বেগুন, ফুলকপি, বাঁধাকপি, মরিচ, তরমুজ, পেঁপে, মিষ্টিকুমড়া, স্ট্রবেরী, পটল, টমেটোসহ নানা ধরনের সবজির চারা। এসব চারা কোকোডাস্ট পদ্ধতিতে উৎপাদন করে কৃষকদের সরবরাহ করছেন উপজেলার হোসেনগাঁও ইউনিয়নের রাউতনগর গ্রামের কৃষক মোবারক হোসেন। তার চারা উৎপাদনের এমন উদ্যোগ ইতোমধ্যে সাড়া ফেলেছে পুরো উপজেলা জুড়ে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সারি সারি প্লাস্টিকের ট্রে সাজানো। তাতে সারিবদ্ধভাবে শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির শাকসবজির চারা। তবে অবাক করা ব্যাপার হচ্ছে, এসব চারার সঙ্গে মাটির কোনো সম্পৃক্ততা নেই। আধুনিক পদ্ধতিতে মাটির ব্যবহার ছাড়াই প্লাস্টিকের ট্রের মধ্যে কোকোডাস্ট ও জৈবসার (কেঁচো কম্পোস্ট) ব্যবহার করে বীজ বপন করা হচ্ছে। মাটির সঙ্গে সম্পৃক্ত না থাকায় রোগ বালাইয়ের আক্রমণ নেই এবং চারার গুণগত মান ভালো থাকে। এ পদ্ধতিতে চারা উৎপাদন করে তিনি প্রতি বছর আয় করছেন চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা। মোবারক হোসেন বলেন, ‘আমার রাউতনগর বাজারে বীজ ভান্ডারের একটি দোকান রয়েছে। দুই বছর আগে ইউটিউবে কোকোডাস্ট পদ্ধতিতে চারা উৎপাদনের ভিডিও দেখে আমিও এ পদ্ধতিতে চারা উৎপাদনে আগ্রহী হই। প্রথমে ২০ শতাংশ জমিতে বগুড়া থেকে কোকোডাস্ট সংগ্রহ করে ১১০০ টি ট্রেতে প্রায় ১ লক্ষ চারা উৎপাদন শুরু করি। এ পদ্ধতিতে চারা উৎপাদন করে সরবারহ করে ভালো লাভবান হওয়ায় দিন দিন আরো জায়গা বাড়াচ্ছি। আমার এ নার্সারিতে ৪ জন শ্রমিক কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। ট্রেতে বীজ বপন শেষে ঢেকে দেয়া হয় নেট দিয়ে। ফলে কোনো ধরনের কীটপতঙ্গ চারাগাছকে আক্রমণ করতে পারে না। চারাগুলো বেড়ে উঠে সুস্থ ও সবলভাবে।’ কৃষক মঞ্জুর ও তসলিম জানান, গেল বছর কোকোডাস্ট পদ্ধতিতে উৎপাদিত বাঁধাকপির চারা নিয়ে জমিতে ভালো ফলন পেয়েছেন। তাই এবারও এসেছেন চারা সংগ্রহ করতে। সুস্থ, সবল ও বালাইমুক্ত চারা হলে ফসল ভালো হয়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, কোকোডাস্টে পানি ধারণক্ষমতা অনেক বেশি। তাই যেকোনো বীজ থেকে চারা গজায় খুব সহজেই। এ পদ্ধতিতে বীজতলায় একসঙ্গে লাখ লাখ চারা উৎপাদন সম্ভব। মাটির সঙ্গে সম্পৃক্ততা না থাকায় রোগবালাইয়ের আক্রমণ নেই। এটি একটি লাভজনক পদ্ধতি। আমরা মোবারক হোসেনের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাই এবং কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের এভাবে চারা উৎপাদনের পরামর্শ দিচ্ছি।